ভূগোল থেকে জানতে পারা গেছেনরসিংদীর কলার সুখ্যাতির কথা। নরসিংদীর কলা স্বাদ, গন্ধ, রং ও আকারে সুন্দর ছিল বলে তারা প্রাত্যহিক খাবার তালিকায় নরসিংদীর কলাকে বেছে নিয়েছিল। এর আগে ঢাকায় নিযুক্ত ২৯ জন মোগল সুবেদার, ৪৮ জন ইংরেজ লর্ড সহ পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সকল শাসকদেরই নরসিংদীর কলা সরবরাহ করা হতো। শুধু তাই নয় রাষ্ট্রীয় অতিথিদেরকে নরসিংদীর কলা দিয়ে অতিথিদেরকে নরসিংদীর কলা দিয়ে আপ্যায়ন করা হতো। বিদেশী বণিকরাও শখ করে নরসিংদীর কলা কিনে নিতো। দেশ বিদেশে নরসিংদীর কলার এতো কদরের কারণেই পাটের পরেই নরসিংদীর মানুষের দ্বিতীয় অর্থকরী ফসল হল কলা। কলা চাষাবাদকে কেন্দ্র করে নরসিংদীর স্থানীয় অর্থনীতিতে একটি অর্থনৈতিক বুনিয়াদ রচিত হয়েছিল। কলা কখন থেকে নরসিংদীতে চাষাবাদ শুরু হয় তা জানা যায়নি। তবে ভূতত্ত্ববিদদের মতে নরসিংদী পাহাড়ী ও সমতল ভূমির বয়স কমবেশী ১০ হাজার বছর। কলার উৎপত্তিস্থল যেহেতু এশিয়া সেহেতু কৃষির প্রারম্ভিকতা থেকেই সম্ভবত: নরসিংদীতে কলার চাষাবাদ হতো। কৃষিতাত্বিকদের মতো ধান চাষাবাদের সমসাময়িক কাল থেকে নরসিংদীতে কলা চাষাবাদ হয়ে থাকতে পারে। প্রাপ্ত তথ্যমতে বৃটিশ শাসনামলে প্রথম দিকে বর্তমানে নরসিংদী জেলার ৬ টি উপজেলায় কমবেশী ৪ হাজার হেক্টর জমিতে কলা চাষাবাদ হতো। তার মধ্যে অন্তত ৩ হাজার হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হতো সবরী, কবরী, চাম্পা, চিনি চম্পা, অগ্নিসাগর ইত্যাদি কলা। উৎপাদন হতো অন্ত:ত ৮০ ল টন কলা। ওসব কলা চাষাবাদে ও ব্যবসার সাথে সাথে পরো প্রত্যভাবে এক/দেড় লক্ষ্য মানুষ জাড়িত ছিল। উৎপাদিত কলা নরসিংদী থেকে রাজধানী ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানী করা হতো। কলা রফতানীর জন্য পাকিস্তান শাসনামলে বাংলাদেশের রেলওয়ের একটি লোকাল ট্রেনের নামকরণ করা হয়েছিল কলার গাড়ি। আর সেই কলা নরসিংদী জেলার
বেলাব উপজেলার চর উজিলাব ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশী জন্মে থাকে। আর এ জন্যই চর উজিলাব ইউনিয়ন কলার জন্য বিখ্যাত। তার মধ্যে আমাদের এ অঞ্চলে পেঁপে ও সবচেয়ে বেশী জন্মে থাকে।